দোয়ারাবাজারে মসজিদে ছাত্রকে বলৎকারের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।। এলাকায় তোলপাড়

প্রকাশিত:রবিবার, ৩০ জুলা ২০২৩ ০৩:০৭

দোয়ারাবাজার(সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা:

দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নে শিক্ষককর্তৃক মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত এক ছাত্রের সাথে জোড়পূর্বক বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৯ জুন (বৃহস্পতিবার) রাতে নরসিংপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর জামে মসজিদে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তbমাওলানা আক্তার হোসাইন দৌলতপুর জামে মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্বে আছেন। ঘটনার পর থেকে এলাকার একটি মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জোড় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর জামে মসজিদের ইমাম মাও আক্তার হোসাইন স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্বের পাশাপশি ওই মসজিদে ইমামতি করতেন। মসজিদে থাকার সুবাদে প্রতিদিন কোন না কোন শিক্ষার্থী তার সাথে মসজিদে রাতে ঘুমাতেন। এক সাথে থাকার এই সুযোগে মাদ্রাসার একাধিক ছাত্রের সাথে বলৎকার করেন তিনি। এতে এলাকায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আরেকজন শিক্ষার্থীকে ডেকে ওই শিক্ষার্থীর সম্পর্কে নানান কথা বলেন মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার সুপার আক্তার হোসাইন। ঘটনার পর অন্য এক শিক্ষার্থীর সাথে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কথা বলার একটি অডিও রেকর্ড ও ছাত্রের সাথে কথা বলা অডিওতে শুনা যায়। অভিযুক্ত ইমাম বলেন,তারে আমি খবর দিছি আমার কান্দাত আইতো আমার কিছু ভালা লাগের না,তারে কিছু কইতামনা। তরে (ছদ্বনাম) তো আমি কোনদিন খারাপ কিছু করছিনা।তর সাথে যা করছি তার সাথে ও তো তাই। যদিও কইরা থাকি ভুলতো মানুষেই করে আমি না হয় ভুল করেছি। আমি খুবি কষ্টে আছি এখবার তো তোমরা দেখতায় আছলায় আইয়া। আমি মরিজিমু যদি কিছু হয়। আমারে আর মসজিদে নিবোনি। এখন আমি কিতা করতাম বিদায় লইলিতামনি মসজিদ তাকিন। আমি এতো সতর্কতায় থাকি তার পরেও এতো কিছু। আমারে আগে যদি ছাত্রররা কিছু কইতো আমি আগে মসজিদ থেকে ছাত্র সরিয়ে নিতাম। সয়তান যদি আমার লগে থাকেও হে (ছদ্বনাম) আমার লগে থাইক্কা ও হে আমারে না করেনা। কমপক্ষে তুমরা আমারে কইতায় যে হুজুর আমরা অসৈজ্য ওইগেছি। আপনি সতর্ক হৌন। যদি ইলা কইতো কোন দুঃখ আছিল নি।আমি ১৫-২০ দিন ধরে তার (বলৎকারের স্বিকার শিক্ষার্থী) চলাফেরা ও মনের অবস্থা দেখে বুঝতে পারছি যে হয়তো তার শরীর খারাপ। আমি কয়েকদিন আগে ঈদের পরে বাজারে তাকে ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করেছি সে উত্তর দেয়নি। তুই তারা দুইটারে বুজাও।
ইত্যাদি অডিও রেকর্ডে রয়েছে।
.
ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচারের দাবিতে ফেইসবুকে পোষ্ট করেন একাধিক জন। পরে স্থানীয় মুরুব্বিরা বিষয়টি যাচাই বাঁচাইয়ের জন্য একটি তদন্ত টিম গঠন করেন। তদন্ত টিম ঘটন করার প্রায় ১৫ দিন পার হলেও কোন সুরাহা পায়নি স্থানীয় প্রতিবাদী মহল। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় তদন্ত কমিটির কাছ থেকে কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছেনা বলে দাবী নামপ্রকাশে একাধিক ব্যক্তির।

স্থানীয়দের তোপেড় মুখে ও পারিবারিক সম্মানের ভয়ে ঘটনাটি সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হয়নি বলৎকারের স্বিকার (ছদ্মনামের বাড়ির লোকজন।

এদিকে ঘটনার পর থেকে চাকরিরত মাদ্রাসায় আসছেনা ও আত্মগোপনে রয়েছে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। এতে একাধিকবার ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি মিটিং করেছেন বলে জানা গেছে। এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্থি দাবী করেছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল হোসেন বলেন বিষয়টি আমি শুনেছি সত্য মিথ্যা জানি না।

ভিকটিমের চাচা নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার চেষ্টা করছি, যদি মীমাংসা না হয় আপনাদের সহযোগিতা চাইব এখন কিছু করার দরকার নাই।

এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি স্থানীয়দের জিজ্ঞেস করেন, আমি অসুস্থ আছি কথা বলতে পারবোনা।

দৌলতপুর জামে মসজিদের ক্যাশিয়ার সফিক মিয়া জানান,ইমাম আক্তার হোসাইন শরীর অসুস্থা জানিয়ে মসজিদ থেকে বিদায় নিয়েছেন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল হেকিম বলেন আমি দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে সভাপতি দায়িত্ব পালন করে আসছি। এ বিষয়ে ভিটিমের পরিবার নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ উপস্থাপন করে নাই।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ